কৃষকদের মুখে হাসি

ধানের মৌ-মৌ গন্ধে কৃষকদের মুখে হাসি

নতুন ধানের মৌ-মৌ গন্ধে যেন মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। ৪০ ভাগ ধানই কাটার উপযোগী হয়েছে। কেউ ধান কাটছে। আবার কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর ১ সপ্তাহের মধ্যে আগে পুরো দমে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। বৃষ্টি না থাকায় ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক।

তবে সার, কিটনাশক ও শ্রমিকসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে হতাশায় রয়েছেন কৃষকরা। এখন শ্রমিক পেলেও পুরো মৌসুমে শ্রমিক সংকট নিয়েও ভাবছেন কৃষক। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, যান্ত্রিক নির্ভর হলে শ্রমিক সংকট থাকবে না। পাশাপাশি খরচ কম। বুধবার (২৬ এপ্রিল) বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম, শেরপুর, কাহালুসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকের সাথে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ ৮৭ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০৭০ হেক্টর ধান কাটা হয়েছে। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়। বগুড়া অঞ্চলে ধান কাটা নির্ভর করে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের শ্রমিকের উপর। এই শ্রমিকরা এসে ধানকাটা মাড়াই শুরু করে এতে শ্রমিকের দাম কম পড়ে। রংপুর অঞ্চলের শ্রমিক না পেলে স্থানীয় শ্রমিদের দাম আকাশ ছোয়া হয়ে যেত।

নন্দীগ্রামের পাঁচ গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা জানান, ১৮ বিঘা জমিতে বিআর-২৮ জাতের বোরো ধান চাষ করেছেন। কাটা মাড়াই শুরু করেছেন ১০ বিঘা কাটা মাড়াই সম্পূর্ণ হয়েছে প্রতি বিঘায় গড়ে ২৮ মণ করে ফলন পেয়েছেন। রংপুর পিরগঞ্জ থেকে আশা শ্রমিকদের ৪ হাজার ৮শ টাকা বিঘায় চুক্তি দিয়েছেন। তারা জমি থেকে ধান কাটা মাড়াই করে দেওয়া পর্যন্ত।

নন্দীগ্রাম এলাকার স্থানীয় কৃষকরা জানান, স্থানীয় শ্রমিকরা বিঘা প্রতি ধান কাটা মজুরী নিচ্ছেন ৫ হাজার টাকা। তারপরেও সময়মত শ্রমিক পাওয়া যায়না। বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকরা আসছে এই এলাকায়। জয়পুর হাটের কালাই থেকে আসা শ্রমিক সরদার শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা ৪ হাজার ৮শ টাকা প্রতি বিঘা কাটছি। এতে আমাদের ৫ জন সারাদিন লাগে কিছু ক্ষেত্রে ৬জনও লাগে।

এদিকে বিভিন্ন ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বিআর-২৮ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৩০ টাকা, মিনিকেট ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা এবং স্থানীয় কাটারী ১০২০ থেকে ১১৭০ টাকা, আতপ ৯০ (সুগন্ধী) ধান ১৯২০ টাকা মণ দরে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: মতলুবর রহমান বলেন, এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ জেলার ১২ উপজেলায় ১ লক্ষ্য ৮৬ হাজার ৭৫০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সেখানে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষক দামও ভালো পাচ্ছে।