লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে রাতের আঁধারে টিনের ঘর নির্মাণ করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ওরফে বাদশা গাজি এবং তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে। জমির মালিক নিজাম মিয়াসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়সংলগ্ন মিয়ারহাট এলাকায়। ভুক্তভোগীদের দাবি, জমিতে অবৈধভাবে টিনের ঘর তুলতে গেলে বাধা দেওয়ায় তাঁদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের ভাই নুর আলম, আবুল কাশেম ও শাহ আলমের কাছ থেকে সদর উপজেলার দালালবাজার এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরে প্রায় সাত মাস আগে ওই জমিটি মিয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী মাইনুদ্দিন কিনে সেখানে চারটি দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেন।
ভুক্তভোগী নিজাম মিয়া, তাঁর মেয়ে আয়শা, সাজেদা ও নুর নাহার এবং জামাতা আতরের জামান জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে দোকানঘর ভেঙে ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এ অবস্থায় শনিবার রাতে বিএনপি নেতা বাদশা গাজির নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা জমিটি দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ শুরু করে বলে তাঁদের অভিযোগ।
তাঁরা আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে রাতেই ৯৯৯-এ কল করলে হাজিমারা ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে পরিস্থিতি শান্ত করে।
অভিযোগের বিষয়ে আমিনুল ইসলাম ওরফে বাদশা গাজি বলেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। অভিযোগকারীরা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ঘনাস্থলে আমি ছিলাম না।
তবে রাতের আঁধারে ঘর তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমির মালিক আলাউদ্দিন নিজ জমিতেই ঘর তুলেছেন। সাংবাদিকের সামনে তিনি জমির দলিল ও রেকর্ডসংক্রান্ত কাগজপত্র উপস্থাপন করে জানান, জমিটি নিয়ে রেকর্ডের জটিলতা থাকায় তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন এবং মামলা চলমান রয়েছে। এ সময় আলাউদ্দিন ঘর তোলার বিষয়টি স্বীকার করলেও রাতের আঁধারে কাজ করার প্রসঙ্গে প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, দল ও দলের নেতাকর্মীদের হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
হাজিমারা ফাঁড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহিম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে কাগজপত্রসহ থানায় উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া বলেন, ঘটনার বিষয়ে পুলিশ অবগত রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।